মানব সভ্যতার হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রঁসুনের নাম। শুধু চিকিৎসা ব্যবস্থায় নয় মানবজাতির দৈন্যন্দিন জীবনেও রঁসুনের প্রভাব বিশাল রকমের। রঁসুনের গন্ধে আমরা সকলেই নাক সিটকোই। কিন্তু, রঁসুন যেমন আমাদের রসনার স্বাদ তৃপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তেমনি রঁসুন দিয়ে দুষ্টু আত্মা বা ভ্যাম্পায়ার মানে রক্তচোষা বাঁদুড়-মানুষদের তাড়ানো হয়। শতকের পর শতক ধরে রঁসুন নিয়ে এমনই সব কথকথা ছড়িয়ে আছে। এরমধ্যে এমনকিছু ‘মিথ’ আছে যা ৭০০০ বছরেরও বেশি পুরানো।
১) ইউরোপে ‘হোয়াইট ম্যাজিক’-এর নাকি মূল মাধ্যমই হচ্ছে রঁসুন। এমনকী, এই রঁসুন দিয়ে ইউরোপিয়ানরা দুষ্টু আত্মা বা ভ্যাম্পায়ারদের মোকাবিলা করেন। রঁসুনের মালা বা রঁসুন ঘরের সামনে ঝুলিয়ে রাখলে দুষ্টু আত্মা বা ভ্যাম্পায়াররা আসতে পারে না বলে বিশ্বাস।
২) ইসলাম মতে রঁসুন খেয়ে মসজিদে যাওয়া মানা। কারণ, রঁসুনের গন্ধে আল্লার নাম করতে গিয়ে মন অন্যদিকে চলে যেতে পারে। হিন্দুরাও এই একই কারণে ভগবানের পুজো-আর্চা করার সময় বা মন্দিরে যেতে গেলে রঁসুনকে এড়িয়ে চলে। কারণ, রঁসুনের গন্ধে মনের পবিত্রতা নষ্ঠ হয় বলে বহু হিন্দু মনে করেন।
৩) ক্যাম্ফরের সঙ্গে পোড়া রঁসুন মেশালে মশা, মাছি, পোকামাকড়ের হাত রেহাই পাওয়া যায়। রঁসুনকে ক্রাস করে জলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘর মুছলেও পোকা-মাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৪) রঁসুনে ১৭ মাত্রার অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এই অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলোকে কাজ করতে সাহায্য করে। কারণ, মানুষের শরীরে ৭৫ শতাংশে থাকে এই অ্যামিনো অ্যাসিড।
৫) চাইনিজ ডিসে রঁসুন বেশি ব্যবহার হওয়ার কারণ জানলে অবাক হবেন, কারণ, সেখানে বিশ্বের ৬৬% রঁসুন উৎপাদন হয়।
৬) প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জখম সৈনিকদের গ্যাংরিনের চিকিৎসাতে সালফারের ভান্ডার কম পড়লে রঁসুন ব্যবহার করা হত।
৭) রঁসুন হার্টের পক্ষে খুবই ভালো। কারণ, কাঁচা রঁসুন খেলে কোলেস্টোরল কমে। সর্দি-কাশিতেও রঁসুনের পথ্য মারাত্মকরকমের কার্যকারি।
৮) হাত থেকে রঁসুনের গন্ধ দূর করতে, ঠান্ডা জলের মধ্যে স্টিলের বাসনে হাত ঘসুন। গন্ধ দূর হবে।
৯) ১৯ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে ‘গার্লিক ডে’ পালিত হয়।
১০) বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় খাবারেও রঁসুন ব্যবহার করা হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লাসুন কি ক্ষীর’।
0 comments: