মানুষ তার অঙ্গসজ্জার যেসব উপায় আবিষ্কার করেছে, তাদের মধ্যে সারা পৃথিবীজুড়েই অলঙ্কার পরিধানের রীতি বিশেষ জনপ্রিয়। যদিও অলঙ্কার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই ব্যবহার্য, তবু নারীদের মধ্যেই অলঙ্কার পরিধানের
রীতি বেশি প্রচলিত। এবং বিবিধ অলঙ্কারের মধ্যে নিঃসন্দেহে সোনার অলঙ্কারই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন নারীরা। উপমহাদেশের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, বহুকাল আগে থেকেই সোনার গহনা উপমহাদেশের নারীদের বিশেষ প্রিয়। সে কী শুধুমাত্র সোনা অত্যন্ত মূল্যবান ধাতু বলে, নাকি এর অন্য কোনও কারণ রয়েছে? আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রয়েছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ধাতুকে রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় ধাতুকে শোধন ও মারণের মাধ্যমে যে ধাতুভস্ম প্রস্তুত করা হয়, তা শরীরের পক্ষে বিশেষ উপকারী বলে মনে করা হয়। সমস্ত ধাতুর উপকারী গুণ অবশ্য এক রকমের নয়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে সোনাকে বিশেষ উপকারী বলে মনে করা হয়। শরীরের নানা অংশের উপকার করার সঙ্গেই অস্থি অর্থাৎ হাড়ের পক্ষে স্বর্ণভস্ম বিশেষ উপকারী বলে মনে করে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র। অলঙ্কার পরিধান করলে স্বর্ণের এই বিশেষ গুণই শরীরের হিতসাধন করে বলে ব্যাখ্যা। আয়ুর্বেদে নারীকে পুরুষের তুলনায় শারীরিকভাবে দুর্বল বলে মনে করা হয়। বলা হয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের তুলনায় নারীদের অস্থি দ্রুত ক্ষয় পায়। সন্তান ধারণ ও সন্তান প্রসবের ফলে এই ক্ষয় আরও দ্রুত গতিতে ঘটে। এই কারণেই প্রাচীনকালে মহিলাদের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার পরিধানের রীতি প্রচলন করেছিলেন আয়ুর্বেদশাস্ত্রীরা। তাঁরা দেখেছিলেন, অলঙ্কার রূপে স্বর্ণকে যদি শরীরের সংস্পর্শে রাখা যায় তাহলে মহিলাদের শরীর তুলনামূলকভাবে অনেকটা নীরোগ থাকে। তাঁদের হাড়ের জোরও বৃদ্ধি পায়। এই মতবাদের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে যেমন সংশয় রয়েছে, তেমনই ঐতিহাসিকরাও স্বর্ণালঙ্কার পরিধানের এহেন ইতিহাসকে প্রশ্নাতীত বলে মনে করছেন না। তাছাড়া এ যুগের নারীরা যদি সোনার গয়না পরাকে স্বাস্থ্যকর বলে মনেও করেন, তাহলেও গা ভর্তি সোনার গয়না পরার আর্থিক সামর্থ্য অধিকাংশ ভারতীয় নারীরই যে নেই, তা বলাই বাহুল্য। এবেলা Continue Reading
0 comments: