শরীরের ওজন কমানো বা সুস্থ থাকার জন্য ডায়েট করে থাকেন অনেকই। খাবার
পরিমাণ কমিয়ে, শারীরিক পরিশ্রম করে ডায়েট করতে পারেন। চাইলে আপনি শুধু ফল
খেয়েও ডায়েট করা যায়। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের
বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, নিজেকে সুস্থ
রাখার জন্য প্রত্যেকেই নিজের মতো চেষ্টা করে। ফল দিয়ে ডায়েট করলে আপনি
থাকবেন আরও সতেজ ও সুন্দর।
অন্য উপকরণের মতো ফল দিয়েও ডায়েট করতে পারেন। ফল খেয়ে ডায়েট করলে কিছু
সময় পরপর ফল খেতে হবে, এ ধারণাটা ভুল। আমরা যতবার সাধারণ খাবার খাই,
ডায়েটের সময় ঠিক ততবারেই ফল খেতে হবে। মানে আমরা যদি ৫ থেকে ৬ বার সাধারণ
খাবার খাই। তাহলে ফল দিয়ে ডায়েট করলেও ৫ / ৬ বার ফল খেতে হবে।
ফল দিয়ে ডায়েট শুরু করার আগে কী কারণে ডায়েট করছি, সেটা আগে জানতে হবে। একেক ফলের একেক গুণ। ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারের ধরনও আলাদা। মিষ্টি স্বাদের ফল একধরনের উপকার। পানির পরিমাণ বেশি এমন ফল খেলে আরেক ধরনের উপকার। আবার টকজাতীয় ফল খেলে পাবেন আরেক ধরনের পুষ্টি। আপনার ডায়েটের কারণ ও ধরনের ওপর ফল নির্বাচন করুন। তবে যে ফলেই নির্বাচন করেন না কেন, টক ফল খালি পেটে না খাওয়াই ভালো।
অনেকেই আছে ডায়েটের সময় ফলের রস করে খান। শুধু ফলের রস না খাওয়াই ভালো। ফলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। ফলের রস করে খেলে পটাশিয়ামের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। এর ফলে কিডনি, ডায়াবেটিসের রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই ফলের জুস করার সময় অল্প পরিমাণ পানি দিলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
ফল পেট ভরে না খাওয়াই ভালো। পেট ভরে না খেয়ে অল্প পরিমাণ ফল খাওয়া উচিত। বেশি ফল একসঙ্গে খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেকই আছেন একসঙ্গে অনেক ফল ক্রয় করেন। একসঙ্গে অনেক ফল কিনলে ফলগুলো ভালোভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। যদি সংরক্ষণের সমস্যা হয়, তাহলে অল্প পরিমাণ ফল কেনাই উচিত। ফলের যেকোনো অংশ নষ্ট হলে পুরো অংশে এর জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। তাই ফলে অল্প পরিমাণ পচা অংশ কেটে বাকি অংশ ফল খাওয়া উচিত নয়। পুরো ফলটিই ফেলে দেওয়া উচিত।
সরাসরি খাওয়ার চেয়ে প্রক্রিয়াজাত করে ফল খাওয়া ভালো। এতে ফলে পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আপনি চাইলে ফলের কাস্টার, মিল সেক, ফলের ডেজার্ট, সালাদ ইত্যাদি তৈরি করে খেতে পারেন।
ফলের সরল শর্করা ভালোভাবে শোষণ হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় প্রয়োজন। ফল গ্রহণ করলে পুষ্টি উপাদান, আঁশ ও সরল চিনি দেহে সহজে পরিপাক হয় এবং ফল থেকে পাওয়া উপকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফল মুখ থেকে সরাসরি পাকস্থলীতে যাওয়ার পথে অন্য খাবার দিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হলে খাবার পচে অ্যাসিড তৈরি হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর জন্য ফল খাওয়ার কিছু সময় আগে পানি খাওয়া উচিত।
ব্যায়ামের ঠিক আগে বা পরের সময়টি ফল খাওয়ার উপযুক্ত সময়।
বিছানায় যাওয়ার খুব কাছাকাছি সময়ে ফল গ্রহণ ঠিক নয়। এ সময় ফল রক্তে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এটি দেহে ইনসুলিনের মাত্রার পরিবর্তন করে। এই উভয় অবস্থাই আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
0 comments: