Friday, April 20, 2018

যক্ষ্মা থেকে হোক রক্ষা

২৪ মার্চ যক্ষ্মা দিবস
  • এ বছর এই দিবসের প্রতিপাদ্য ‘টিবি মুক্ত বিশ্বের জন্য চাই সঠিক নেতৃত্ব’।
  • ছয় মাস ও আট মাসের মেয়াদে যক্ষ্মার ওষুধ খেতে হয়।
  • সারা দেশে ডটস সেন্টারে বিনা মূল্যে যক্ষ্মার ওষুধ পাওয়া যায়।
আমাদের দেশে যক্ষ্মা এখনো বড় একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। এতে শুধু যে নিম্ন আয়ের মানুষেরাই আক্রান্ত হচ্ছে তা নয়, বরং রোগটা যে কারোরই হতে পারে। সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসাই যক্ষ্মা থেকে রক্ষা করতে পারে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে
যক্ষ্মা রোগীর কাছাকাছি থাকেন এমন লোকজন—যেমন, পরিবারের সদস্য, চিকিৎসক, নার্স বা সেবা-শুশ্রূষাকারীর আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, মাদকাসক্তি, বার্ধক্য, অপুষ্টি ইত্যাদি ক্ষেত্রে যক্ষ্মার ঝুঁকি থাকে। আবার যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম—যেমন, এইডস রোগী, দীর্ঘ মেয়াদে স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধসেবী মানুষের যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যক্ষ্মা কেবল ফুসফুসে হয় না
৮৫ শতাংশ যক্ষ্মা ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। আবার ফুসফুসের আবরণী, লসিকাগ্রন্থি, মস্তিষ্কের আবরণী, অন্ত্র, হাড়, ত্বক ইত্যাদিতেও যক্ষ্মা হতে পারে। তবে হৃৎপিণ্ড, নখ ও চুল এ রোগের আওতামুক্ত।

জীবাণু গেলেই যক্ষ্মা হয় না
শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যক্ষ্মার জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে। এ জীবাণু সাধারণত কাশির মাধ্যমেই ছড়ায়। অনেক সময় যক্ষ্মা সুপ্ত অবস্থায় থাকে। পরবর্তী সময়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলে তা প্রকাশ পেতে পারে। আবার অনেক সময় যক্ষ্মার জীবাণু দ্রুত শরীরের সর্বত্র ছড়িয়ে যায় ও জটিল আকার ধারণ করে।

কখন সতর্ক হবেন?
তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে কাশি (কাশির সঙ্গে রক্ত যেতেও পারে, না-ও যেতে পারে), জ্বর, অরুচি, ওজন কমা, অবসাদ ইত্যাদি দেখা দিলে অবশ্যই যক্ষ্মা পরীক্ষা করা উচিত। এর বাইরে দীর্ঘক্ষণ ধরে লসিকাগ্রন্থির স্ফীতি, মলত্যাগের অভ্যাসে আকস্মিক পরিবর্তন, কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য কখনো ডায়রিয়া, বুকে বা পেটে পানি জমা ইত্যাদিও যক্ষ্মার উপসর্গ হিসেবে বিবেচ্য।

যক্ষ্মা নিয়ে ভয় নেই
যক্ষ্মা হলেও আতঙ্কিত হবেন না। এ রোগের সুচিকিৎসা আছে। তবে পূর্ণ মেয়াদে ওষুধ সেবন করতে হবে। দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে ওষুধ দেওয়া হয়, ছয় মাস ও আট মাসের মেয়াদে। ওষুধ অনিয়মিত খেলে পরবর্তী সময়ে ওষুধপ্রতিরোধী যক্ষ্মা হতে পারে, যা সারানো খুব জটিল। সারা দেশে ডটস সেন্টারে বিনা মূল্যে যক্ষ্মার ওষুধ দেওয়া হয়। তাই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রতিবছরের মতো এবারও ২৪ মার্চ বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘টিবি মুক্ত বিশ্বের জন্য চাই সঠিক নেতৃত্ব’।

লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

SHARE THIS

Author:

Facebook Comment

0 comments: