কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি সমাজের বহুদিনের ক্ষত হয়ে রয়েছে। পৃথিবীজুড়ে এ সমস্যা বিদ্যমান। বহু আইন ও নীতিমালার প্রয়োগ রয়েছে অফিস-আদালতে। সামাজিক সচেতনতা ছাড়াও বিশেষ করে নারীদের এ ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি রোধে পরামর্শ দিয়েছেন আইন সংস্থা 'ক্রাইট্যাক্সকর্প'-এর প্রতিষ্ঠাতা কানিস্ক আগারওয়াল। পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপিত হলেই দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে বলেন।
১. প্রথমেই চাকরিদাতাদের উচিত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি ইন্টারনাল কমপ্লেইন্টস কমিটি (আইসিসি) গঠন করতে হবে। হয়রানির শিকার কর্মীরা এখানে অভিযোগ দাখিল করবেন। তাদের পরিচয় গোপন রাখাতে কঠোর নির্দেশ জারি থাকবে। যারা হয়রানি করছেন তারা যেন ক্ষমতার অপব্যবহার না করতে পারেন সে বিষয়েও মনোযোগ দিতে হবে।
২. কোনো অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইসিসি সদস্যদের প্রস্তাবনা কর্তৃপক্ষকে সিরিয়াসলি নিতে হবে। অভিযোগ তদন্তের ক্ষেত্রেও কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধানকারীর বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।
৩. যৌন হয়রানিমূলক কোনো কথা বা কাজ হচ্ছে কিনা তা তদারকিতেও মনোযোগী থাকতে হবে ম্যানেজার ও সুপারভাইজারদের। ৪. আবার অভিযোগ আসামাত্রই তা সত্য বলে জ্ঞান করলে হবে না আইসিসি কমিটিকে। গোটা প্রক্রিয়াটি নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত করতে হবে। মিথ্যা অভিযোগও আসতে পারে।
৫. কেউ যৌন নীপিড়নের শিকার হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যস্ত হতে হবে কমিটিকে। নির্যাতনের শিকার যিনি তার পাশে দাঁড়িয়ে মানসিক শক্তি দিতে হবে। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনতে হবে।
৬. কমিটিতে এইচআর কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নির্যাতিতের জন্য কি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সময় ব্যয় করলে চলবে না। এ ক্ষেত্রে খোলামেলা বা গোপন বৈঠকের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. এমন ঘটনা ঘটার পর নির্যাতিতকে অযথা আবেগময় পরামর্শ দেওয়া উচিত নয়। এ নিয়ে কেউ যেন কোনো কথা না বলেন সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
৮. ম্যানেজার বা সুপারভাইজার বিভাগের নারীদের সঙ্গে কথা বলবেন। তারা এ ধরনের সমস্যা বোধ করছেন কিনা তা জানতে হবে। অথবা তিনিই কেন এমন অবস্থার শিকার হচ্ছেন তা বুঝতে হবে।
৯. নারী কর্মী এমন অভিযোগ নিয়ে আসলে কোনো অবস্থাতেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবে না কমিটি। যেকোনো কর্মী বা কর্মকর্তা এমনটা করতে পারেন। বিষয়টা কমিটির মাথায় রাখতে হবে।
১০. কর্মপরিবেশকে নিরাপদ করতে হবে। নারী-পুরুষ সবাই যেন নিশ্চিন্ত মনে কাজ করতে পারেন তেমন অবস্থা সৃষ্টি দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। যৌন হয়রানির মতো অস্বস্তিকর বিষয়টি কার্যকরভাবে সমাধানে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। একবার ঘটে গেলে দ্বিতীয়বার যেন কোনোভাবেই না ঘটে তার ব্যবস্থা গ্রহণ অতি জরুরি।
0 comments: