আমরা প্রাকৃতিক অনেক খাবারেই আশীর্বাদ পুষ্ট তবে সেই খাবার গুলোর মাঝে ব্যতিক্রমধর্মী এমন কিছু খাবার আছে যেগুলোর পুষ্টি গুণাগুণের পরিমাণ অনেক বেশি। এখানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনে ভরপুর কিছু উত্তম খাবার সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়াকে রোধ করার জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অনেক প্রয়োজন রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহ থেকে টক্সিন এবং ফ্রি র্যাডিকেল বের করে দিয়ে ক্যান্সারের মতো গুরুত্বর অসুস্থতা থেকে দেহকে রক্ষা করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর খাবার বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বর্তমানে আমরা প্যাকেটজাত খাবার, ভেজাল ও কীটনাশক দেয়া, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড ইত্যাদি খাচ্ছি এবং অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ব্যবস্থা মেনে চলছি। যার ফলে আমাদের দেহে বিষাক্ত পদার্থ জমা হচ্ছে এবং সেই সাথে দেহে বিষক্রিয়া হচ্ছে। তাই আমাদের সকলেরই জীবন বাঁচানোর উপায় হিসেবে অনেক বেশি পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করা প্রয়োজন। অনেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করার উপায় হিসেবে প্রতিদিন গ্রিন টি খেয়ে থাকেন। এসব পানীয় ছাড়াও এমন কিছু খাবার রয়েছে যা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অনেক ধরনের ভিটামিনের উৎস হিসেবে কাজ করবে।
এখানে কিছু ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো-
০১। চেরি এই ফলটি উচ্চ পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এবং লাল রঙের চেরিতে রয়েছে ১৭ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে। ফ্রি র্যাডিকেল অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই কাজে বাধা প্রদান করে।
০২। পেয়ারা পেয়ারা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এবং পটাসিয়ামে ভরপুর। পেয়ারা হার্ট, মস্তিস্ক এবং হজমের জন্য খুবই ভালো। এছাড়া পেয়ারাতে থাকা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলে বিরুদ্ধে লড়াই করার সাথে সাথে ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
০৩। লেবু, কমলা এবং জাম্বুরা এই ফলগুলো ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এরা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। বেশির ভাগ টক ফলে থাকে ফ্লেভোনয়েড, অ্যান্থোসায়ানিন, পলিফেনল এবং ভিটামিন সি।
০৪। টমেটো টমেটোতে থাকে উচ্চ পরিমানে লাইকোপিন নামক উপাদান যা ক্যারোটিনয়েডের মাঝে সবচেয়ে কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। টমেটো ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, বয়সজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এমনকি বেশ কয়েক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
০৫। ব্লুবেরি উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন ফল হিসেবে ব্লুবেরি বেশ পরিচিত। এছাড়া এতে থাকে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন এ, সি, খাদ্যআঁশ এবং অন্যান্য ভিটামিন যা অসুস্থতা থেকে দেহকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। ব্লুবেরিতে থাকা পুষ্টি উপাদান চোখের জন্য, প্রতিরোধক ক্ষমতার জন্য এবং হজমের জন্য ভালো।
০৬। লাল ক্যাপসিকাম খাবারের মাঝে মজাদার স্বাদ যোগ করার পাশাপাশি লাল ক্যাপসিকাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, সি, কে তে ভরপুর। এতে থাকে অনেক বেশি পরিমান ভিটামিন সি থাকে সেই সাথে থাকে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও যা দেহকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে।
০৭। পেঁয়াজ পেঁয়াজও ভিটামিন এ, সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেহকে সাহায্য করে। এছাড়া পেঁয়াজের রয়েছে জীবাণুমুক্তকরণ গুনাগুন যার ফলে এটি ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ চুলের জন্যও বেশ উপকারি।
0 comments: