দেহের
যেকোনো অংশে আক্রমণ চালাতে পারে ডায়াবেটিস। এর মধ্যে একটি অংশ ত্বক।
ঘটনাক্রমে অনেক ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিস আক্রমণের প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পায়
ত্বকের মাধ্যমে। ভালো খবরটি হলো, ডায়াবেটিস সংশ্লিষ্ট ত্বকের সমস্যার
অধিকাংশই চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান মেলে, যদি তা আগে থেকেই চিহ্নিত করা যায়।
এখানে বিশেষজ্ঞরা কিছু ত্বকের সমস্যার কথা জানিয়েছেন।
১. চুলকানিঃ
অনেক
সময়ই ত্বকে চুলকানি ঘটায় ডায়াবেটিস। ইয়েস্ট সংক্রমণ, শুষ্ক ত্বক এবং রক্ত
চলাচলে বাধার কারণে এ ধরনের চুলকানি হতে পারে। যদি রক্ত চলাচলে সমস্যার
কারণে চুলকানি হয় তবে সাধারণত দেহের নিচের অংশেই হয়ে থাকে। এমন হলে গোসলে
নিয়্ন্ত্রণ আনতে হবে। বিশেষ করে শীতকালে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল বেশি করা যাবে
না।
২. অ্যাকানথোসিস নিগরিকান্সঃ
এ
সমস্যায় আক্রান্ত হলে ত্বকের রং গাঢ় হয়ে আসে এবং পাতলা হতে থাকে। সাধারণত
গলার দুই পাশে, বগলে এবং কুঁচকির অংশে ত্বক তামাটে বর্ণের হয়ে যায়। আবার
হাতের যেকোন অংশে, কনুই এবং হাঁটুর ত্বও গাঢ় বাদামী হয়ে যায়। অন্য কোনো
রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বিশেষ কারণেও এমন হতে পারে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের
মাঝে ব্যাপক হারে দেখা যায়।
৩. ছত্রাকের সংক্রমণঃ
ইয়েস্টের
মতো এক ধরনের ছত্রাক রয়েছে যার নাম ক্যানডিডা অ্যালবিকান্স। ডায়াবেটিসে
আক্রান্তদের মাঝে এই ছত্রাকের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। ত্বকে লালচে র্যাশ
ওঠে এর কারণে। একে ঘিরে ফোসকাও পড়তে পারে এবং কিছুটা ফুলে ওঠে। সাধারণত
ত্বকের যে অংশে ভাঁজ পড়ে থাকে এবং উষ্ণতা বিরাজ করে সেখানেই ক্যানডিডা
অ্যালবিকান্সের বিস্তার ঘটে। চিকিৎসকদের দেওয়া অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম
ব্যবহার করতে হয়।
৪. ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণঃ
ডায়াবেটিসের
কারণে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে ত্বকে। যেমন- স্টায়েস। এটি
চোখের পাতায় আক্রমণ করে। এ ছাড়া আছে বয়েলস যা চুলের গ্রন্থিতে সংক্রমণ
ঘটায়। আবার কারবানক্লেস সংক্রমণ ঘটায় ত্বকের গভীরে এবং টিস্যুতে। আবার নখেও
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে।
দেহে
সংক্রমিত এই অংশগুলো সাধারণত উষ্ণ, লালচে এবং ব্যথাযুক্ত হয়ে থাকে। এ সব
সংক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য চিকিৎসা দরকার। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়।
ত্বকের
এ সমস্যাগুলো ডায়াবেটিসের আগাম লক্ষণ হিসাবে প্রকাশ পেতে পারে। অবশ্যই
বিশেষজ্ঞকে দেখাতে হবে। পুষ্টিকর খাবার, ব্যায়াম এবং ওষুধের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ
পরামর্শ দেবেন। এ ছাড়া তখন থেকেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার
কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
0 comments: