Saturday, December 2, 2017

বাদাম মস্তিষ্কের বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি বাড়ায়

বাদাম একটি সাধারণ শব্দ যা কোনো উদ্ভিদের বড়, শুষ্ক এবং তৈলাক্ত বীজ অথবা ফলকে বোঝায়। যদিও অনেক উদ্ভিদের বীজ এবং ফলকে বাদাম হিসেবে ডাকা হয়, কিন্তু জীববিজ্ঞানীগণ এদের মধ্যে অল্প কিছু বীজ বা ফলকেই সত্যিকারের বাদাম হিসেবে বিবেচনা করেন।


বাদামের পুষ্টিগুণ নিয়ে প্রকাশ হচ্ছে একের পর এক গবেষণা। হৃদরোগের প্রতিরোধীক্ষমতা থেকে শুরু করে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোয় বাদামের কার্যকর ভূমিকা উঠে আসছে এসব গবেষণায়। বাদাম খাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মস্তিষ্কের তরঙ্গে ওঠা অনুরণন পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা এ রকমই এক সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাদাম মস্তিষ্কের বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি বাড়ায়। খবর মেডিকেল নিউজ টুডে।

মস্তিষ্কের সক্ষমতা বাড়ানোয় বাদামের কার্যকারিতা নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু এটি খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ভেতরে আসলে কী ঘটে, সে বিষয়টি নিয়ে খুব একটা পর্যবেক্ষণ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক লোমা লিন্ডা ইউনিভার্সিটির (এলএলইউ) স্কুল অব অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনসের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. লি বার্ক ও তার সহকর্মীরা সম্প্রতি বিষয়টি নিয়েই বেশ কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। এফএএসইবি (ফেডারেশন অব আমেরিকান সোসাইটিজ ফর এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি) জার্নালে তাদের এ গবেষণার ফল প্রকাশ হয়েছে।

বাদামে ফ্ল্যাভোনয়েড নামে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। প্রদাহনাশক, ক্যান্সার ও হৃদরোগ প্রতিরোধী হিসেবে ফ্ল্যাভোনয়েডের বেশ সুনাম রয়েছে। আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম খাওয়ার পর এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলে প্রবেশ করতে সক্ষম। নতুন কিছু শেখা ও স্মৃতি হিসেবে তা সংরক্ষণের সঙ্গে হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলটির সম্পর্ক রয়েছে। ধারণা করা হতো, হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলে নিউরোজেনেসিস বা নতুন নিউরন জন্ম নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে ফ্ল্যাভোনয়েড। এ ছাড়া মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটায় উপাদানটি।

মস্তিষ্কের ইলেকট্রিক কার্যক্রম রূপান্তরের ক্ষেত্রে বাদামে এসব উপকারিতা কীভাবে প্রভাব ফেলে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন গবেষকরা। এজন্য এক দল স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়মিতভাবেই প্রচুর পরিমাণে বাদাম গ্রহণ করতে বলা হয়। এরপর তাদের মস্তিষ্কের ভিন্ন ভিন্ন নয়টি অঞ্চলের তরঙ্গ চলাচল ব্যবস্থাকে ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রামের (ইইজি) মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

দেখা গেছে, বাদাম গ্রহণের ফলে মস্তিষ্কে ডেল্টা ওয়েভ ও গামা ওয়েভ হিসেবে চিহ্নিত তরঙ্গের চলাচল বেড়ে যায়। বিশেষ করে চীনাবাদাম গ্রহণের ফলে ডেল্টা ওয়েভ বেশ জোরালো হয়ে ওঠে। এ ডেল্টা ওয়েভের সঙ্গে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধী কার্যক্রম বৃদ্ধির সরাসরি সংযোগ রয়েছে। অন্যদিকে গামা ওয়েভকে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যায় পেস্তাবাদাম। গামা ওয়েভের সঙ্গে মস্তিষ্কের উপলব্ধি করার ক্ষমতা, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ কার্যক্রম সরাসরি সংশ্লিষ্ট। এ ছাড়া গামা ও ডেল্টা দুই ধরনেরই তরঙ্গ একসঙ্গে সর্বাধিক জোরালো হয়ে ওঠে পিক্যান নাটের কল্যাণে। এছাড়া সব ধরনের বাদামেই উচ্চমাত্রায় উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।



SHARE THIS

Author:

Facebook Comment

0 comments: