আমাদের অনেকেই দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথার শিকার। প্রথমে অল্প হতে হতে এক সময় তা বিরাট আকার ধারণ করে। অনেকের তো মাইগ্রেনও আছে। এর জন্য নিয়মিত ওষুধও খাচ্ছেন কিন্তু মাথাব্যথা সাময়িক কম থাকছে। আবার সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থাতেও মাঝে মাঝেই মাথা ব্যথা করছে।
আপনি হয়তো ইতিমধ্যে ভাবছেন ওষুধে কাজ করছে না, তাই ওষুধ বদলানোরও চিন্তা করছেন। তবে সব ফলাফল কিন্তু ওষুধের নয়। আমরা প্রতিনিয়ত এমন অনেক খাবার খাচ্ছি যা আমাদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। সেসব খাবারের কারণে সময়ে অসময়ে মাথাব্যথা করছে। আর আপনি হয়তো এই খাবারগুলো না জেনেই খাচ্ছেন। সুতরাং আজ জেনে নিন, কোন কোন খাবার খেলে আপনার মাথাব্যথা বাড়তে পারে।
ডায়েট সোডা : আপনি যদি নিয়মিত মাথাব্যথায় ভোগেন তাহলে আপনার পানীয়তে ডায়েট সোডা খাওয়া বন্ধ করুন। সম্প্রতি খাদ্যতালিকাগত নির্দেশিকা উপদেষ্টা কমিটি ডিজিএসি থেকে বলা হয় যে, পানীয়তে অতিরিক্ত পরিমাণ সোডা খেতে থাকলে মাথা ঘোরা, স্মৃতির ক্ষয় এবং মাথাব্যথা হতে পারে। ২০১৫ সালের ডিজিএসির একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা প্রতিদিন অধিক মিষ্টিযুক্ত কোলা খান তাদের মাথাব্যথার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অনেকে কোলার মিষ্টতা কমানোর জন্য সোডা মিশিয়ে খান। সুস্থ থাকতে চাইলে যেখানে প্রতিদিন ৫৮ মিগ্রা চিনি একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট সেখানে সোডাতেই থাকে ১৮০ মিগ্রা চিনি।
কলা এবং অ্যভাকাডো : কলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। বেশিরভাগ ডাক্তার প্রতিদিন কলা খাওয়ার জন্য বলেন। তাই বলে কলা পাঁকার পর তা কয়েকদিন রেখে খাওয়া ঠিক নয়। এতে উপকারী উপাদানের বিনাশ ঘটে এবং অতিরিক্ত পাঁকা কলা খাওয়াতে আপনার মাথাব্যথা হতে পারে। সব থেকে ভালো হয় কলা কাঁচা দেখে কিনুন, তারপর পাঁকার সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলুন। পেঁকে যাওয়ার পরে কয়েকদিন রেখে তারপর খাবেন না। ক্লেভল্যান্ড ক্লিনিকের সেন্টার ফর নিউরোলোজিকাল রেস্টোরেশনের এমডি জেনিফার ক্রিগলার বলেন, অনেক টিরামিন যুক্ত খাবার খেলে মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন হতে পারে। টিরামিন হলো এক ধরনের অ্যামিনো এসিড। অ্যাভাকাডোতে প্রচুর পরিমাণ টিরামিন রয়েছে। তাই এটি পরিমাণে বেশি খাওয়া ঠিক নয়।
আইসক্রিম : আইসক্রিম অথবা ঠান্ডা পানীয়ের কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। প্রথমে মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি খুবই সুস্বাদু মনে হয় কিন্তু ধীরে ধীরে আর ভালো লাগে না। একসঙ্গে পরিমাণে অনেক আইসক্রিম খেলে মাথাব্যথা হয়। কারণ এই ঠান্ডা খাবারটি যখন আপনার গলা দিয়ে যায় তখন আপনার গলার সঙ্গে সংযুক্ত শিরা উপশিরাগুলো সাময়িক ভাবে কাজে ধীরগতি সম্পন্ন হয়ে যায়। ফলে মাথাব্যথা করে। এ জন্য আইসক্রিম খেলে পরিমাণে কম খান এবং ধীরে ধীরে খান।
চুইংগাম : বেশিরভাগ চুইংগামে প্রচুর চিনি থাকে, যা মাথাব্যথার কারণ। চুইংগাম চিবোতে থাকলে এটি গাল সহ মাথার বিভিন্ন শিরা উপশিরার সঞ্চালন করে। তবে অনেক্ষণ চিবোতে থাকলে দাঁতের সঙ্গে সঙ্গে মাথাও ব্যথা করতে পারে।
পনির : পনির যতদিন ধরে রাখা যায় তত স্বাদযুক্ত হয়। কিন্তু পনিরে প্রচুর পরিমাণ টিরামিন রয়েছে যা মাথাব্যথার মূল কারণ।
লবণ : অনেক খাবার টেবিলে লবণ না দেখলে অর্থাৎ খাওয়ার সময় কাঁচা লবণ না খেলে যেন তাদের খাওয়া পরিপূর্ণ হয় না। তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ। লবণ মূলত সোডিয়ামে পরিপূর্ণ এক ধরনের খাবার। তরকারিতে অতিরিক্ত লবণ বা খাওয়ার সময় কাঁচা লবণ খেলে মাথাব্যথা হয়।
চকলেট : চকলেট খুবই মজাদার একটি খাবার। কিন্তু এটি ক্যাফেইন এবং টিরামিনে পরিপূর্ণ। তাই পরিমাণে বেশি চকলেট খাওয়ার পরিণাম হতে পারে মাথাব্যথা।
0 comments: