দুশ্চিন্তা এমন একটি মানসিক সমস্যা যার জন্য কোন কারণের প্রয়োজন নেই। জীবনে কোন প্রকার কোন সমস্যা হয়ত আপনি এই মুহুর্তে মোকাবেলা করছেন না। তবু আপনার দুশ্চিন্তা হতে পারে। বেশিরভাগ দুশ্চিন্তার রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে তারা বিশেষ কোন সমস্যার কথা বলতে পারেন না। কী নেই তাদের জীবনে, কী চাই তাদের, কি পেলে তারা দুশ্চিন্তা করবেন না তার কোন সদুত্তর পাওয়া যায় নি। আসলে কারও কারও ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা একটি মানসিক ব্যাধি। টনি বার্নহার্ড জে.ডি. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ৩টি কার্যকরী কৌশল ব্যাখ্যা করেছেন তার লেখায়। আসুন জেনে নিই কৌশলগুলো-
১। দুশ্চিন্তাকে ভাবুন পুরোনো বন্ধু,
যার সাথে দেখা হবে মাঝে মাঝে চিন্তিত হওয়ার সমস্যা নিয়ে আরও চিন্তিত হবেন না। বরং একে মেনে নিন। ভাবুন দুশ্চিন্তা আপনার পুরোনো বন্ধু। মাঝে মাঝে দেখা হওয়া মন্দ না! নিজেকে বোঝান, ‘সব ঠিক আছে। সব ঠিক হয়ে যাবে।’ আপনার মনকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আপনার রয়েছে। তাই দুশ্চিন্তা যতই আপনার মাথায় চড়ে বসতে চাইবে আপনি শান্ত মনে ততই তাঁকে নামিয়ে দেবেন। একটু সচেতন হলেই আপনি এটা পারবেন। শুধু নিজেক বিশ্বাস করান, বলুন যে ‘আমি পারব’। কাজটা খুব সহজ নয়। প্রথমে আপনাকে এটা বুঝতে হবে যে, আপনি যে দুশ্চিন্তা করছেন তা আসলে অর্থহীন। চিন্তাগ্রস্থ রোগীরা কখনো বিশ্বাস করেন না যে তাদের চিন্তা করা আসলে একটি ব্যাধি। তারা ছোট ছোট অনেক কারণকে চিন্তার কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। হয়ত এটুকু স্বীকার করে বলেন যে, ‘আমি একটু বেশী চিন্তা করি।’ কিন্তু কখনোই তারা একে জীবন থেকে ভিন্ন মেনে নিতে চান না। কিন্তু আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনি আসলে ব্যাধিগ্রস্থ তাহলে আপনিই আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন। আর প্রাকটিস করতে করতে এক সময় আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন দুশ্চিন্তাকে।
২। দুশ্চিন্তাকে স্থায়ী সমস্যা ভাববেন না
আপনার লক্ষ্য হবে দুশ্চিন্তার সমস্যাকে জয় করা। কখনোই ভাববেন না ‘এই সমস্যা থাকবেই’। দুশ্চিন্তা আমাদের স্ট্রেস বাড়ায়, বাড়ায় আরও অনেক মানসিক, শারীরিক সমস্যা। তাই আপনি যখনই খেয়াল করবেন, আপনি দুশ্চিন্তা করতে শুরু করেছেন তখনই নিজেকে বোঝাতে শুরু করবেন, বলবেন ‘দুশ্চিন্তার কিছু নেই’। যেসব বিষয় আপনার দুশ্চিন্তা বাড়ায় সেগুলো থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। ঘটনাগুলোকে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা শুরু করুন। সব কিছুই কোন না কারণে ঘটে। নিশ্চয়ই যা হবে ভাল হবে। নিজের উপর এবং আপনার আত্মীয়পরিজনদের উপর ভরসা রাখুন। কোনকিছুই স্থায়ী নয়। স্থায়ী নয় জীবনের হতাশা, স্থায়ী নয় কোন সমস্যাও।
৩। বর্তমানে মনোযোগ দিন
সচেতনতার সাথে নিজের বর্তমান কাজের দিকে মনযোগী হন। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয়, ‘প্রেজেন্ট মোমেন্ট এক্সারসাইজ’। ৯০ সেকেন্ড নিয়মে নিজেকে বর্তমানে রাখার চেষ্টা করে দেখুন। যাবতীয় স্ট্রেস থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা সম্ভব এভাবে। নিজের ভাবনাকে কোনভাবেই আগে কি ঘটেছিল আর পরে কি ঘটবে সেদিকে যেতে দেবেন না। শুধু বর্তমানের কথা ভাববেন। ৯০ সেকেন্ড করে প্রাকটিস করুন। এই সাধারণ একটা প্রাকটিস আপনার অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যাবে কিছুদিন পর।
0 comments: